[লেখাটি নেয়া হয়েছে এলজিবিটি আন্দোলন নিয়ে প্রকাশিতব্য (ইন শা আল্লাহ) বই 'অবক্ষয়কাল' থেকে]
অবিশ্বাস্য রকমের দ্রুত গতিতে পশ্চিমা বিশ্বের উপর রাজত্ব কায়েম করেছে অদ্ভুত এক মতবাদ। এ মতবাদের নাম ‘ট্র্যান্সজেন্ডারবাদ’ বা রূপান্তরকামীতা। অনেকে একে ‘জেন্ডার আইডেন্টিটি’ বা লিঙ্গ পরিচয় মতবাদও বলে থাকেন।
এই মতবাদ বলে, কোন পুরুষের যদি ‘নিজেকে নারী বলে মনে হয়’, তাহলে সে একজন নারী। সমাজ ও আইন নারী হিসেবেই তাকে বিবেচনা করবে। সেই পুরুষ শারীরিকভাবে পুরোপুরি স্বাভাবিক হোক, তিন বাচ্চার বাপ হোক, কিছু আসে যায় না তাতে।
ট্র্যান্সজেন্ডারবাদ বলে, কোন নারীর নিজেকে যদি পুরুষ মনে হয়, তাহলে সে পুরুষ। যদিও তার মাসিক হয়, সে গর্ভবতী হয়, শারীরিকভাবে সে হয় ১০০% সুস্থ। নিজেকে পুরুষ মনে করা নারী যদি সন্তানের জন্ম দেয়, তাহলে সেটা ট্র্যান্সজেন্ডারবাদের ভ্রান্তির প্রমাণ না। বরং ট্র্যান্সজেন্ডারবাদের চোখে এটাই প্রমাণ করে যে, ‘পুরুষও সন্তান জন্ম দিতে পারে’!
এই মতবাদ অনুযায়ী কোনো বালকের যদি ‘মনে হয়’ সে বালিকা অথবা কোনো বালিকার যদি মনে হয় সে বালক, তাহলে এই ‘মনে হওয়া’র ভিত্তিতে সেই বালক কিংবা বালিকাকে চাহিবামাত্র হরমোন ট্রিটমেন্ট আর বিভিন্ন অপারেশনের মাধ্যমে কাটাকুটি করে নিজের শরীরকে বদলে ফেলার ‘অধিকার’ দিতে হবে। তার এই ‘মনে হওয়া’র চিকিৎসা করা যাবে না, বরং বদলে দিতে হবে শরীরকে।
ট্র্যান্সজেন্ডারবাদের প্রধান দাবি-
জন্মগত দেহ যা-ই হোক না কেন, নিজেকে যে নারী দাবি করবে তাকে নারী বলে মেনে নিতে হবে, নিজেকে যে পুরুষ দাবি করবে তাকে মেনে নিতে হবে পুরুষ বলে, আইনী ও সামাজিকভাবে। মানুষ ইচ্ছেমতো পোশাক পরবে, ইচ্ছেমতো ওষুধ আর অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বদলে নেবে নিজের দেহকে। আর কেউ যদি অস্ত্রোপচার না করেই নিজেকে বিপরীত লিঙ্গের বলে দাবি করে, তাও মেনে নিতে হবে মুখ বুজে। রাষ্ট্র ও সমাজ কোনো বাধা দিতে পারবে না, বরং ‘সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠী’ হিসেবে এ ধরনের মানুষকে দিতে হবে বিশেষ সুবিধা। সেই সাথে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে একদম ছোটবেলা থেকে সবাইকে শেখাতে হবে যে, মানুষের মনটাই গুরুত্বপূর্ণ; দেহ না।
এই মতবাদ আজ শেখানো হচ্ছে পশ্চিমের স্কুলগুলোতে। প্রবল আগ্রহে এই মতবাদকে গ্রহণ করে নিয়েছে চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলো। মধ্যপন্থী থেকে শুরু করে বামপন্থী, সব রাজনৈতিক দল ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান এই মতবাদ প্রচার করে চলছে উগ্রভাবে। অ্যামেরিকার রাষ্ট্রপ্রধানের এক্সিকিউটিভ নির্দেশ, রাজ্য ও কেন্দ্রীয় আইন থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক পলিসিও ঠিক হচ্ছে নতুন এই মতবাদের আলোকে। এই মতবাদের উপর ভিত্তি করে আইন তৈরি হচ্ছে এবং এই মতবাদ শেখানো হচ্ছে শিশুদের ক্লাসরুমে। এই বিচিত্র আদর্শকে উপস্থাপন করা হচ্ছে নাগরিক ও মানবাধিকারের প্রশ্ন হিসেবে। মানবাধিকারের নামে সারা বিশ্বজুড়ে এই মতবাদ ফেরি করে বেড়াচ্ছে পশ্চিমা বিশ্ব এবং জাতিসংঘ। বিলিয়ে বেড়াচ্ছে বিপুল অর্থ। ফলে বাংলাদেশের পাঠ্যপুস্তক থেকে শুরু করে পাকিস্তানের আদালতের রায়েও ঢুকে পড়েছে ট্র্যান্সজেন্ডারবাদ।
ট্র্যান্সজেন্ডারবাদের বক্তব্য এতোটাই বিচিত্র, এতোটাই বিদঘুটে যে প্রথম শোনার পর কেউ বিশ্বাসই করতে পারে না আদৌ এমন কোনো মতবাদ থাকতে পারে। অনেকে মনে করেন হয়তো কোনো কারণে ট্র্যান্সজেন্ডারবাদকে অতিরঞ্জিতভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে।
হয়তো এটা তৃতীয় লিঙ্গ বা হিজড়াদের অধিকার নিয়ে কোনো আন্দোলন।
হয়তো এটা মানবিক বিবেচনা আর অধিকারের বিষয়।
হয়তো লিঙ্গ পরিবর্তন করতে চাওয়া, নিজেদের বিপরীত লিঙ্গের ব্যক্তি হিসেবে পরিচয় দেওয়া মানুষের শারীরিক কোনো সমস্যা আছে।
না, বাস্তবতা হলো ট্র্যান্সজেন্ডারবাদ সত্যিকার অর্থেই এতোটা বিদঘুটে, বিচিত্র, বিকৃত। লম্বা চওড়া তাত্ত্বিক আলোচনার বদলে কিছু বাস্তব উদাহরণ দিচ্ছি, পুরো ব্যাপারটা পরিষ্কার হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
রিচার্ড লাভিন: রিচার্ড লাভিন। জন্ম ১৯৫৭ সালে, ধনী ইহুদী পরিবারে। পড়াশোনা করেছে ম্যাসাচুসেটসের এক অভিজাত বয়েজ স্কুলে। তারপর হার্ভার্ড আর টুলেইন ইউনিভার্সিটিতে থেকে নিয়েছে উচ্চতর ডিগ্রি। ডাক্তার হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করা রিচার্ড এখন অ্যামেরিকার পেন স্টেইট বিশ্ববিদ্যালয়ে শিশু রোগ ও মানসিক রোগের প্রফেসর। ১৯৮৮ সালে বিয়ে করা রিচার্ডের আছে দুই সন্তান।
![](https://cms.chintaporadh.com/wp-content/uploads/2023/10/image.png)
![](https://cms.chintaporadh.com/wp-content/uploads/2023/10/image-1-1024x983.png)
কিন্তু ২০১১ সালে দুই বাচ্চার বাপ, ৫৪ বছর বয়সী রিচার্ড ঘোষণা করে, সে আসলে একজন নারী। নতুন নাম নেয় র্যাইচেল। ২০২১ সালে রিচার্ড, না সরি, ‘র্যাইচেল’, অ্যামেরিকার অ্যাসিস্টেন্ট সেক্রেটারি অফ হেলথ মনোনীত হয়। সরকারী সব ঘোষণায় বলা হয় লাভিন অ্যামেরিকার জনস্বাস্থ্য বাহিনীতে কাজ করা প্রথম ফোর-স্টার ‘নারী অফিসার’।
জেইমস প্রিটযকার: অ্যামেরিকার সবচেয়ে ধনী পরিবারগুলোর একটা হলো প্রিটযকার পরিবার। বিখ্যাত হায়াত হোটেল, মেডিক্যাল যন্ত্রপাতি বানানো ও সাপ্লাই, অস্ত্র বানানোসহ বিভিন্ন ব্যবসার মালিক তারা। মোট কতো টাকা আছে নিজেরাও ঠিকঠাক জানে কি না সন্দেহ। এই বিলিয়নেয়ার ইহুদী পরিবারের সন্তান জেইমস প্রিটযকার মার্কিন সেনাবাহিনী থেকে লেফটেন্যান্ট কর্নেল হিসেবে অবসর নেয় ২০০১ সালে। দুইবার বিয়ে করা জেইমস প্রিটযকার এক মেয়ে আর দুই ছেলের বাবা।
![](https://cms.chintaporadh.com/wp-content/uploads/2023/10/image-2.png)
২০১৩ সালে ৬৩ বছর বয়সে ভদ্রলোক নিজেকে নারী ঘোষণা করে এবং আইনীভাবে নিজের নাম পরিবর্তন করে। তার নতুন নাম জেনিফার। ‘জেনিফার’ প্রিটযকারকে প্রথম ট্র্যান্সজেন্ডার বিলিয়নেয়ার বলা হয়। জেনিফার প্রিটযকার এবং তার পরিবার ট্র্যান্সজেন্ডারবাদের অর্থায়নের পেছনে সবচেয়ে বড় খেলোয়াড়দের অন্যতম। এই অ্যাজেন্ডার প্রসারের পেছনে সবচে’ বেশি টাকা ঢালা প্রতিষ্ঠানের লিস্ট করা হলে প্রিটযকারের গড়ে তোলা টাওয়ানি ফাউন্ডেশানের নাম থাকবে প্রথম তিনের মধ্যে।
ব্রুস জেনার: ১৯৪৯ সালে জন্ম নেওয়া অ্যামেরিকান ক্রীড়াবিদ এবং বিশ্ব রেকর্ড করা অলিম্পিক গোল্ড মেডালিস্ট। খেলাধুলা থেকে অবসর নেওয়ার পর ব্যবসা আর বিনোদন জগতে সফল ক্যারিয়ার গড়ে তোলে ব্রুস জেনার। নাম করেছিল কার রেসিংয়েও। তিন বিয়ে থেকে মোট ছয় সন্তানের বাবা সে। ২০১৫ সালে নিজেকে নারী ঘোষণা করে ব্রুস জেনার। বলে, এখন থেকে তার নাম ক্যাইটলিন। সেই সময়টাতে ‘ক্যাইটলিন’ ছিল সবচেয়ে হাইপ্রোফাইল ট্র্যান্সজেন্ডার। তার রূপান্তরের ঘটনা ব্যাপকভাবে আলোচিত হয় মিডিয়াতে।
![](https://cms.chintaporadh.com/wp-content/uploads/2023/10/image-3.png)
![](https://cms.chintaporadh.com/wp-content/uploads/2023/10/image-4-845x1024.png)
ট্র্যান্সজেন্ডার মানেই অপারেশন করে ‘লিঙ্গ পরিবর্তন’ করা মানুষ, তাও না। মনে রাখবেন, ট্র্যান্সজেন্ডারবাদের মূল বক্তব্য হলো মানুষের পরিচয়ের ক্ষেত্রে শরীর গুরুত্বপূর্ণ না মনের অনুভূতিই আসল। তাই কোনো পুরুষ নিজেকে যদি নারী মনে করে তাহলে অপারেশন করুক বা না করুক, তাকে নারী বলেই গণ্য করতে হবে। দুটো উদাহরণ দেখা যাক।
মহিলা কারাগারে গর্ভবতী দুই কয়েদী: বিচিত্র এ ঘটনা ঘটেছে অ্যামেরিকাতে। ২০১১ সালে হত্যার দায়ে ত্রিশ বছরের জেল হয় ডেমিট্রিয়াস মাইনর নামের এক যুবকের। ৯ বছর জেলে খাটার পর হঠাৎ করে নিজেকে নারী দাবি করতে শুরু করে সে। ট্র্যান্সজেন্ডারবাদের বিষে আচ্ছন্ন অ্যামেরিকান বিচারব্যবস্থা এ দাবি মেনে নিয়ে তাকে পাঠিয়ে দেয় এক মহিলা কারাগারে। কারাগারে নারীদের সাথেই এক সাথে রাখা হয় আপাদমস্তক পুরুষ ডেমিট্রিয়াসকে। ফলে যা হবার তাই হয়, ডেমিট্রিয়াসের সাথে শারীরিক সম্পর্কের জের ধরে গর্ভবতী হয়ে পড়ে দুই নারী কয়েদী। এ ঘটনার পর ডেমিট্রিয়াসকে আবারো পাঠানো হয় পুরুষদের কারাগারে।[1]
ভারতে সন্তানের জন্ম দিলেন কেরালার ট্র্যান্স দম্পতি: প্রতিবেশী দেশের এ ঘটনা নিয়ে প্রচুর মাতামাতি হয়েছে মিডিয়াতে। দেশী মিডিয়াও এ ঘটনা নিয়ে প্রতিবেদন করেছে খুব আগ্রহ নিয়ে। কিন্তু মিডিয়ার বক্তব্য শুনলে পুরো বিষয়টা তালগোল পাকিয়ে ফেলার সম্ভাবনা আছে। প্রতিবেদনগুলোর ছবিতে দেখবেন পুরুষালী পোষাক আর চুলের ছাঁটের একজনকে মা বলা হচ্ছে, আর লম্বা চুলের নারীর পোশাক পরা এক ব্যক্তিকে বলা হচ্ছে বাবা। সেই সাথে ক্যাপশান দেওয়া হয়েছে, ‘সন্তানের জন্ম দিয়েছে একজন রূপান্তরিত পুরুষ’, কেউ কেউ আরো আগ বাড়িয়ে বলছে, ‘ভারতে এই প্রথম মা হলেন কোনো পুরুষ।’
ঘটনা আসলে কী?
মূল ঘটনা হলো, এই দম্পতির মধ্যে যিনি পুরুষ তিনি নিজেকে নারী বলে পরিচয় দেওয়া শুরু করেছেন আর যিনি নারী তিনি নিজের পরিচয় দিচ্ছেন পুরুষ বলে। তবে পুরুষ বলে পরিচয় দিলেও শরীর যেহেতু নারীর, যেহেতু তার জরায়ু আছে, যোনী আছে, তাই তিনি সন্তান জন্ম দিয়েছেন অন্য দশজন নারীর মতোই। কোনো পুরুষ জন্ম দেয়নি। নিজেকে পুরুষ দাবি করা এক নারী সন্তান জন্ম দিয়েছেন। শিরোনাম পার হয়ে মূল খবরে গেলে এ তথ্যগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
(কেরালার) কোঝিকোড়ের উম্মালাথুর অঞ্চলের বাসিন্দা জিয়া পাভাল এবং জাহাদ ফাজিল।...জাহাদ জন্মেছিলেন নারী হয়ে, পরে লিঙ্গ পরিবর্তন করে পুরুষ হয়েছেন।
তবে স্ত্রী থেকে পুরুষ হওয়ার সময় জাহাদের শরীর থেকে ইউটেরাস এবং সন্তানধারণে প্রয়োজনীয় অন্যান্য জননাঙ্গ বাদ দেওয়া হয়নি। তবে তার স্তন বাদ দেওয়া হয়। তাই চিকিৎসকরা তাকে আশ্বাস দিয়েছিলেন তিনি সন্তানধারণ করতে পারবেন।
আশা করি উপরের উদাহরণগুলো থেকে বুঝতে পারছেন ট্র্যান্সজেন্ডারবাদের সাথে শারীরিক ত্রুটি বা এ জাতীয় কোনো কিছুর বিন্দুমাত্র সম্পর্ক নেই। সম্পূর্ণ সুস্থ, শারীরিকভাবে ১০০% নারী বা পুরুষ, যারা একসময় স্বাভাবিকভাবে বাবা কিংবা মা হয়েছে— এক পর্যায়ে এসে নিজেদের বিপরীত লিঙ্গের বলে ঘোষণা দিচ্ছে, বিপরীত লিঙ্গের পোশাক পরতে শুরু করছে, নাম বদলাচ্ছে।
এদের মধ্যে কেউ কেউ সার্জারির মাধ্যমে ‘লিঙ্গ পরিবর্তন’ করছে। দাবি করছে সমাজ তাদের এভাবেই মেনে নিক। অনেকে আবার কোন অপারেশন ছাড়াই দিব্যি বিপরীত লিঙ্গের মানুষ হিসেবে জীবন কাটাচ্ছে। এই হলো ট্র্যান্সজেন্ডারবাদ। তবু যদি কারো কোনো সংশয় থেকে থাকে তাহলে বাংলাদেশ থেকে কিছু উদাহরণ দেখে নেওয়া যাক।
বাংলাদেশ থেকে উদাহরণ:
১৯শে সেপ্টেম্বর ২০২৩, দৈনিক প্রথম আলো-তে প্রকাশিত “নারী থেকে পুরুষ হয়েছেন তিনি, এখন জটিলতা বাংলাদেশ রেলওয়ের চাকরিতে” শিরোনামের প্রতিবেদনে শারমিন আক্তার ঝিনুক নামে এক নারীর কথা বলা হয়েছে। এই নারী শারীরিকভাবে পুরোপুরি সুস্থ। কিন্তু অন্য ‘নারী প্রতি আকৃষ্ট’ হবার কারণে ‘নারী থেকে পুরুষে রূপান্তরিত’ হয়েছেন তিনি। নতুন নাম নিয়েছেন জিবরান সওদাগর। তার ভাষায়,
জিবরান বলেন, ‘আমি ছিলাম নারী। মাসিক হওয়াসহ সবকিছুই স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু যত বড় হচ্ছিলাম, বুঝতে পারছিলাম আমি অন্য ছেলে বা পুরুষদের প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার চেয়ে নারীর প্রতি বেশি আকৃষ্ট হচ্ছি। স্কুলড্রেসের ওড়না পরতে বা মেয়েদের মতো পোশাক পরতে ভালো লাগতো না। একটা সময় একজন মেয়ের সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্ক হয়। চার বছর সম্পর্ক ছিল। কিন্তু সেই মেয়ে চলে যাওয়ার পর মনে হয়, আমি পুরুষ হলে তো ও এভাবে চলে যেতো না।…
গতকাল সোমবার প্রথম আলো কার্যালয়ে এসে জিবরান বলেন, ২০২১ সালে তিনি ভারত থেকে স্তন ও জরায়ু কেটে ফেলা, পুরুষাঙ্গ পুনঃস্থাপনসহ মোট তিনটি বড় অস্ত্রোপচার করেছেন। এতে খরচ হয়েছে প্রায় সাত লাখ টাকা। চাকরির কাগজপত্র, জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্টসহ বিভিন্ন নথিতে জিবরান এখনো শারমিন আক্তার ঝিনুক নামেই আছেন।’
এ বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে শারমিন আক্তার নামের এ নারী শারীরিকভাবে পুরোপুরি সুস্থ ছিলেন। আরেকজন নারীর প্রতি তার বিকৃত কামনা ছিল। এই কামনাকে সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য তিনি নিজেকে ‘পুরুষে রূপান্তরিত’ করেছেন। এখন আবদার করছেন আইন ও সমাজ তাকে যেন মেনে নেয় পুরুষ হিসেবেই।
শারীরিকভাবে পুরুষ হয়ে নিজে নারী দাবি করার ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আরেকজনকে বলতে দেখা যাচ্ছে,
‘আমি জন্মগতভাবে একজন ছেলে, কিন্তু আমার ফীলটা (অনুভূতি) মেয়েদের মতো। মনটা যেহেতু মেয়ে শরীরটা মেয়ের মতো পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা সবসময় কাজ করে। আয়নার সামনে দাঁড়ালে তখন তো মনে হয় এই শরীর তো আমার নয়। সেদিক থেকে অবশ্যই শরীরটা একটা মেয়ের শরীরের আদলে কে না পেতে চাইবে?’
লিংকঃ https://www.youtube.com/watch?v=Tdm4aQpZ7Uw
বাংলাদেশে ট্র্যান্সজেন্ডারবাদ নিয়ে কাজ করা অ্যাক্টিভিস্টদের মধ্যে অন্যতম হো চিন মিন ইসলাম। সেই করোনার সময় থেকে শুরু করে বেশ কয়েক বছর ধরে তাকে বিশেষভাবে ফোকাস করা হচ্ছে মিডিয়াতে।[2] কিছুদিন আগে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করে ট্র্যান্সজেন্ডারবাদ প্রতিষ্ঠায় আইন তৈরির দাবিও জানিয়ে এসেছেন তিনি। ট্র্যান্সজেন্ডারবাদ আসলে কী তা বেশ খোলাখুলি আলোচনা করেছেন এই অ্যাক্টিভিস্ট। তার বক্তব্যগুলো দেখা যাক।
‘ট্র্যান্সজেন্ডার ও হিজড়াদের মধ্যে পার্থক্য কী?’, শিরোনামে সময় টিভির এক প্রতিবেদনে তিনি বলছেন,
‘ট্র্যান্সজেন্ডার মানুষ যারা তারা হচ্ছে তাদের জন্ম হয় ছেলে হিসেবে, বাট সামহাও, তাদের শৈশব বা কৈশোরে যাবার পরে...যেমন আমার জীবনের ২১ বছর পার হবার পর আমি বুঝতে পেরেছি আমি একজন পুরুষ না। আমার নিজেকে বুঝতে, আমার নিজের যৌনতাকে বুঝতে আমার একুশটা বছর পার করতে হয়েছে...’
ট্র্যান্সজেন্ডার ও হিজড়াদের মধ্যে পার্থক্য কি? | Hochemin Islam | Transgender Woman | Somoy TV
তিন বছর আগের আরেক সাক্ষাৎকারে তাকে বলতে দেখা যাচ্ছে,
‘আমার পুরুষাঙ্গ আছে কিন্তু আমি একজন নারী। আমার বুকে পশম আছে, মুখে দাড়ি ওঠে কিন্তু আমিও একজন নারী। শুধু যোনী আর স্তন দিয়ে আপনি একজন নারীকে বিচার করতে পারেন না...আমি পুরুষের শরীরে জন্মেও আসলে পুরুষ নই...
এই ধরনের পুরুষের শরীর নিয়ে জন্মায় যে বাচ্চারা, কিন্তু একটা সময় পর গিয়ে চিন্তা করে যে তার শরীরটা ভুল...বা তার শরীরের সাথে তার মনের, তার সত্তার একটা সংঘাত হয়।’
সূত্রঃ 'পুরুষের শরীরে নারী, ইউটিউব
৭ই অক্টোবর ২০২৩ এ প্রথম আলোতে প্রকাশিত ‘অস্ত্রোপচার করে পুরুষ থেকে নারী হয়েছি, গোপন করার কিছু নেই: হো চি মিন ইসলাম’ শিরোনামের প্রতিবেদন থেকে,
হো চি মিন ইসলাম বলেন, ‘আমার শরীরটা পুরুষের ছিল, কিন্তু ছোটবেলা থেকেই আমি নিজেকে নারী ভাবতাম। অবশেষে অস্ত্রোপচার করে পুরুষ থেকে নারী হয়েছি, গোপন করার কিছু নেই। এখন আমি শারীরিক ও মানসিকভাবে একজন নারী।
‘অস্ত্রোপচারের আগে আমার শরীরটা ছিল পুরুষের। নিজের আইডেন্টিটি বা পরিচিতির জন্য এবং নিরাপত্তার জন্যও অস্ত্রোপচার করাটা জরুরি ছিল…
হো চিন মিন ইসলামের কথা থেকে এ বিষয়টি স্পষ্ট যে, ট্র্যান্সজেন্ডারবাদের সাথে শারীরিক কোনো সমস্যার সম্পর্ক নেই। তাদের শরীর সুস্থ, সমস্যা মনে। লক্ষ্য করার মতো আরেকটা বিষয় হলো, হো চি মিন ইসলাম ‘লিঙ্গ পরিবর্তন অপারেশন করেছেন’ ২০২৩ সালে। কিন্তু এর কমপক্ষে তিন বছর আগে থেকেই সামাজিক ও আইনীভাবে তাকে এবং তার মতো অন্যদের নারী হিসেবে মেনে নেওয়ার দাবি করে আসছেন তিনি।
অর্থাৎ, তাদের দাবি হলো অস্ত্রোপচার হোক বা না হোক, যখন থেকে কেউ নিজেকে বিপরীত লিঙ্গের বলে দাবি করা শুরু করবে, তখন থেকেই সামাজিক ও আইনীভাবে এ দাবি মেনে নিতে হবে।
ট্র্যান্সজেন্ডার মতবাদ আসলে ঠিক কী দাবি করে?
ট্র্যান্সজেন্ডার শব্দটা প্রথম ব্যবহার করা হয় ১৯৬৫ সালে।[3] কেতাবিভাবে ট্র্যান্সজেন্ডার শব্দ দিয়ে এমন কোনো মানুষকে বোঝানো হয়, যার "আত্মপরিচয়ের উপলব্ধি তার শরীরের সাথে মেলে না"। কথাটা একটু খটমটে শোনায়, সহজে বলি। ট্র্যান্সজেন্ডার হলো এমন কেউ যার দেহ পুরুষের কিন্তু সে নিজেকে নারী মনে করে অথবা যার দেহ নারীর কিন্তু সে নিজেকে পুরুষ মনে করে।
কাজেই ট্র্যান্সজেন্ডার নারী বা ট্র্যান্সনারী মানে হলো, এমন পুরুষ যে নিজেকে নারী দাবি করছে, নারীর পোশাক পরছে, নারীসুলভ নাম রাখছে। আর ট্র্যান্সজেন্ডার পুরুষ বা ট্র্যান্সপুরুষ মানে হলো একজন নারী যে নিজেকে পুরুষ বলে দাবি করছে।
বর্তমানে পাশ্চাত্যে নিজেদের ট্র্যান্সজেন্ডার দাবি করা অধিকাংশ লোক অস্ত্রোপচার বা হরমোন সার্জারি করে না। মুখে বলা, নাম বদলানো, পোশাকে অল্পস্বল্প পরিবর্তন আনাই দাবি করার জন্য যথেষ্ট। ট্র্যান্সজেন্ডারবাদের মূল বক্তব্য হলো:
একজন মানুষ পুরুষ নাকি নারী তার সাথে দেহের কোনো সম্পর্ক নেই। মানুষের দেহ তার পরিচয় ঠিক করে না। পরিচয় নির্ভর করে মানুষের মনের উপর। একজন মানুষ নিজেকে যা মনে করে সেটাই তার পরিচয়।
বিশ্বাস হচ্ছে না? অ্যামেরিকার পাবলিক স্কুলগুলোতে বাচ্চাদের কী পড়ানো হচ্ছে দেখুন।
আই অ্যাম জ্যায (I Am Jazz) নামের বইতে বলা হচ্ছে ––
আমার মস্তিষ্ক মেয়েদের কিন্তু শরীর ছেলেদের
এটাকে ট্র্যান্সজেন্ডার বলে
আমি জন্ম থেকেই এমন।
মনে রাখবেন, এ জিনিস শেখানো হচ্ছে প্রাইমারী স্কুলে।
![](https://cms.chintaporadh.com/wp-content/uploads/2023/10/9501ce6f-23df-4dd7-b356-1ddea1773fcb_1714x1362-1024x814.jpg)
ট্র্যান্সজেন্ডারবাদ বলে, একজন শিশু জন্মানোর পর তাকে যে ছেলে বা মেয়ে বলা হয়, তা পুরোটাই হয় অনুমানের ভিত্তিতে। ডাক্তাররা আন্দাজ করে ছেলে বা মেয়ে পরিচয় ‘বরাদ্দ’ করে দেয়। কিন্তু পরে একজন শিশু ‘জন্মকালে নির্ধারিত’ পরিচয়ের বদলে অন্য কোনো পরিচয় বেছে নিতে পারে। জন্মের পরপর যাকে ছেলে ধরে নেওয়া হয়েছিল, সে একসময় গিয়ে নিজেকে মেয়ে বলতে পারে। শরীর যেমনই হোক না কেন, তাকে তখন মেয়েই ধরে নিতে হবে। কারণ কিছু মানুষ ‘ভুল দেহে জন্ম নেয়’।
প্রাইমারী স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের আরেক বই It Feels Good to Be Yourself-এ বলা হচ্ছে,
দেখো, তোমার যখন জন্ম হয়েছিল নিজের অনুভূতি তখন তুমি মানুষকে জানাতে পারতে না। তোমার আশেপাশের মানুষরা তোমাকে দেখে একটা অনুমান করে নিয়েছিল। সেটা ঠিকও হতে পারে, ভুলও হতে পারে।
যদি ভুল হয়ে থাকে, তাহলে সেটা তাদের জানাতে কোনো সমস্যা নেই।
রুথির বয়স যখন ৫, তখন সে তার বাবামা-কে বলেছিল,
‘আমি জানি তোমরা আমাকে ছেলে মনে করো, কিন্তু আসলে আমার মনে হয় আমি একটা মেয়ে।’
![](https://cms.chintaporadh.com/wp-content/uploads/2023/10/c58231f9-02b1-41cd-9cbc-9723de4d47dc_1662x996-1024x614.jpg)
![](https://cms.chintaporadh.com/wp-content/uploads/2023/10/c54a978d-8f5f-42a0-8fda-0502ba154b53_936x896.jpg)
ট্র্যান্সজেন্ডারবাদ তার অবস্থানকে ব্যাখ্যা করার জন্য চারটা ধারণাকে ব্যবহার করে––
- বায়োলজিকাল সেক্স (Biological Sex) বা জন্মগত লিঙ্গ
- সেক্সুয়াল ওরিয়েন্টেশন (Sexual Orientation) বা প্রণয়বোধ ও যৌন আকর্ষণ
- জেন্ডার
- জেন্ডার আইডেন্টিটি (Gender Identity) বা মনস্তাত্ত্বিক লিঙ্গবোধ/’মনের লিঙ্গ’)
ট্র্যান্সজেন্ডারবাদ বলে এই চারটা জিনিস আলাদা। তারা কীভাবে এ চারটিকে সংজ্ঞায়িত সেটা সংক্ষেপে জেনে নেওয়া যাক। তারা বলে,
বায়োলজিকাল সেক্স বা জন্মগত লিঙ্গ হলো স্রেফ দেহের বর্ণনা। মানুষের জন্মগত বৈশিষ্ট্য, যেমন ক্রোমোসোম, যৌনাঙ্গ, হরমোন ইত্যাদি মিলে তার জন্মগত লিঙ্গ ঠিক হয়। কিছু মানুষের পুরুষাঙ্গ থাকে, কিছু মানুষের যোনী থাকে। কিন্তু এগুলো দিয়ে; দেহ দিয়ে মানুষের পরিচয় ঠিক হয় না।
সেক্সুয়াল ওরিয়েন্টেশন হলো মানুষের যৌন রুচি বা আকর্ষণ। যৌন আকর্ষণ বিভিন্ন রকমের হতে পারে। এক্ষেত্রে ভালোমন্দ, ভুল কিংবা সঠিক বলে কিছু নেই। কেউ বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকৃষ্ট হতে পারে, কেউ সমলিঙ্গের প্রতি আকৃষ্ট হতে পারে, কেউ আকৃষ্ট হতে পারে উভয়ের প্রতি। আবার কারো মধ্যে হয়তো যৌনতার কোনো আকাঙ্ক্ষাই নেই। যৌন রুচি একটা বর্ণালীর মতো। এখানে আছে অনেক রঙ। পুরুষ হলেই নারীর প্রতি বা নারী হলেই পুরুষের প্রতি আকর্ষণবোধ করতে হবে, এমন কোনো কথা নেই।
জেন্ডার হলো নারী বা পুরুষ হবার সাথে যুক্ত সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রত্যাশা। সমাজ ও সংস্কৃতি নারীর কাছ থেকে বিশেষ কিছু আচরণ আশা করে, আলাদা ধরনের আচরণ প্রত্যাশা করে পুরুষের কাছ থেকে। নারী ও পুরুষের কেমন হওয়া উচিত, এ ব্যাপারে সমাজের নির্দিষ্ট কিছু ধারণা থাকে। কিন্তু এই ধারণা আর দৃষ্টিভঙ্গিগুলো মানুষের বানানো। সর্বজনীন কিছু না।
জেন্ডারও আসলে একটি বর্ণালীর মতো। নারী বা পুরুষ হবার নির্দিষ্ট কোনো পথ নেই। কেউ নিজেকে নারী পুরুষ, দুটোই, কোনোটাই না অথবা এ দুয়ের মাঝামাঝি কোনো কিছু হিসেবে পরিচয় দিতে পারে। সবই সমান, সবই বৈধ।
জেন্ডার আইডেন্টিটি বা মনস্তাত্ত্বিক লিঙ্গবোধ হলো নিজের ব্যাপারে মানুষের অনুভূতি। কারো দেহ পুরুষের হতে পারে কিন্তু সে নিজেকে নারী মনে করে এবং নিজেকে নারী হিসেবে প্রকাশ করে। সে নারীসুলভ নাম ব্যবহার করে, পোশাক পরে ইত্যাদি। নিজেকে নারী মনে হওয়াটা হলো মনস্তাত্ত্বিক লিঙ্গবোধ বা জেন্ডার আইডেন্টিটি। আর নিজেকে নারী হিসেবে প্রকাশ করাটা হলো জেন্ডার এক্সপ্রেশন (Gender Expression) বা মনের লিঙ্গের বহিঃপ্রকাশ।
একজন মানুষ নিজেকে যা মনে করে সমাজ ও আইন তাকে সেটাই গণ্য করবে। অর্থাৎ জন্মগত লিঙ্গের উপর মনস্তাত্ত্বিক লিঙ্গবোধ প্রাধান্য পাবে। তাই পুরুষাঙ্গ থাকলেও কেউ ‘নারী’ হতে পারে, যোনী থাকলেও কেউ পুরুষ হতে পারে।[4]
এই চারটি ধারণা কীভাবে কাজ করে এবং কীভাবে এগুলোর মাধ্যমে মানুষের পরিচয় তৈরি হয়, সেটা বোঝানোর জন্য বিভিন্ন ছবি ব্যবহার করা হয়। তেমনি একটি ছবি নিচে যুক্ত করা হলো।
![](https://cms.chintaporadh.com/wp-content/uploads/2023/10/Genderbread-Person-v4-ALL_page-0001-791x1024.jpg)
বাংলাদেশেও ট্র্যান্সজেন্ডারবাদের প্রচারে একই ধরনের ছবি ব্যবহার করা হচ্ছে।
![](https://cms.chintaporadh.com/wp-content/uploads/2023/10/khosra-2-1.jpg)
উপরের কথাগুলো একটু কঠিন লাগতে পারে। তবে বিভিন্ন জটিল পরিভাষার আড়ালে এখানে মূল বক্তব্য তা-ই, যা একটু আগে আমরা বলেছি। ট্র্যান্সজেন্ডারবাদ বলে, মানুষের পরিচয় নির্ভর করে তার অনুভূতির উপর। দেহ যাই হোক, নিজেকে সে যা মনে করে সেটাই তার পরিচয়। কাজেই কারো দেহ পুরুষের হলেও সে নিজেকে নারী মনে করতে পারে। দেহ পুরুষের হলেই যে নিজেকে পুরুষ মনে করতে হবে এমন কোনো কথা নেই। মানুষের পরিচয় নির্ভর করে তার অনভূতি আর মনের চাওয়ার উপর। একইভাবে মানুষ কার সাথে যৌন সম্পর্ক করবে, তাও নির্ভর করবে মনের উপর। এখানে ভালোমন্দের কিছু নেই।
বাস্তবতা হলো, এই পুরো শ্রেণীবিভাগটাই বানোয়াট। এ শ্রেণীবিভাগ করা হয়েছে ট্র্যান্সজেন্ডারবাদসহ নানা বিকৃত আচরণের বৈধতা দেওয়ার জন্য। দেহ, যৌনতা, পরিচয় এবং প্রকাশ–আলাদা আলাদা কিছু না। বরং পরস্পর সম্পৃক্ত। একটা আরেকটার উপর নির্ভরশীল। দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন পরিচয় হয় না। মানুষের দেহ নির্দিষ্টভাবে তৈরি। নারী ও পুরুষের দেহের দিকে তাকালে যে কেউ এ সহজ বিষয়টা বুঝতে পারবে। এই সত্যগুলো সব সমাজ ও সভ্যতায় স্পষ্ট। দিন ও রাতের আবর্তনের মতো চিরাচরিত ব্যাপার। কিন্তু নিজেদের বিকৃতি ও অসুস্থতাকে বৈধতা দেওয়ার জন্য এগুলো মুছে ফেলতে চায় ট্র্যান্সজেন্ডারবাদ এবং সমকামী আন্দোলন। নিরেট বাস্তবতাকে বদলে দিতে চায় তারা।
[1] Incarcerated transgender woman Demi Minor impregnates two inmates at NJ prison, https://nypost.com/2022/07/16/transgender-woman-demi-minor-impregnates-two-inmates-at-nj-prison/
[2] Covid-19 frontline warrior: Nurse embraces trans identity, Dhaka Tribune, July 2020.
[3] John F. Oliven, Sexual Hygiene and Pathology: A Manual for the Physician and the Professions (London: Pitman Medical Publishing Co., 1965).
[4] https://bangla.hindustantimes.com/nation-and-world/in-a-cheer-for-the-queer-cambridge-dictionary-uodates-definition-of-woman-31671014716183.html